welcome

bangla golpo | (জনক)- লেখকঃ মোঃ নাজমুল আকন

জনক-[এক]= link

জনক-bangla golpo

লেখকঃ মোঃ নাজমুল আকন

[দুই]

কোন অলক্ষণ এর পাল্লায় পড়ে যে, ভালোবাসতে গেলাম! তাতে নিতান্ত দুঃখ ছারা কিছুই পাইনি। আমার এই অবস্থার কারনও তাই। মাস্টার্স পরিক্ষা শেষে ঘুড়তে গিয়েছিলাম কক্সবাজার, সমুদ্র সৈকতে। যদিও আগেও অনেকবার গিয়েছিলাম। সি বিচে খুব সকালে যাওয়া আমার অভ্যাস। ঘুম ঘুম চোখ নিয়েই চলে গেলাম সমুদ্র পারে। সকালে মানুষের ভীরও কম নয় তবে তিব্র রোদটা থাকেনা। দক্ষিণের সবটুকু হাওয়া বুকে এসে লাগছিলো, সতেজ অক্সিজেনে বুক ফুলে উঠছিলো। তখন চোখ বুজে তা অনুভব করছিলাম। চোখ মেলে তাকাতেই দেখলাম, সাগরের তীরে টাকনু জলে দারিয়ে আছে একটি মেয়ে। হাত দুটিকে পাখির ডানার মতো মেলে আছে। সবুজ ওড়না দক্ষিণা হাওয়ায় আনমনে উড়ছে। আমি অবাক নয়নে তার উড়তে থাকা চুল গুলোর দিকে তাকিয়ে ছিলাম।

ঠিক কত সময় ধরে এমন ছিলো বলতে পারবোনা। আমি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছি। ঠিক তখনি গর্জন করে বড় একটা ঢেউ দেখে হাসতে হাসতে দৌড়ে উপরে চলে এলো মেয়েটি। তখনও ভাবিনি আমাদের দেখা হবে কথা হবে কখনও। কিন্তু বিধাতার লিখন, আমি বন্ধুদের সাথে হোটেলে চলে যাব, সেখানে সকালের নাস্তা করতে হবে। ঠিক তখনি ডাক পরলো পিছন থেকে। এইযে সাদা টিশার্ট ভাইয়া! তাকাতেই দেখলাম সমুদ্র তিরের সেই সুন্দরী মেয়েটি। এখনও তার মুখে হাসি, বললো আপনার ফোনটা একটু দেয়া যাবে? আমার ফোনটা হোটেলে রেখে আসছি। এখন একটু জরুরী কাজ পরেগেছে ফোন করতে হবে। আমি কিছু না ভেবেই ফোনটা তার হাতে তুলে দিলাম। এক গাল হেসে মোবাইলটি হাতে নিলো। এক পাসে দাঁড়িয়ে কার সাথে যেন কথা বলছে। তার পর ফোনটা কেঁটে দিয়ে আবার ডায়াল করে কিছুক্ষণ কল করার চেস্টা করলো। কিন্ত কোর রিসপন্স হয়তো করেনি। তাই ফোনটা আমার দিকে বারিয়ে দিয়ে বললো ধন্যবাদ! আমি স্বাগতম জানিয়ে চলে আসলাম হোটেলে।bangla golpo

বিভিন্ন যায়গায় যাওয়া হলো বন্ধুদের সাথে, তার দিন পরেই ঢাকা চলে আসলাম।

ঢাকায় আসার কিছুদিন পর, হুট করেই এক বন্ধুর সাথে চলে গেলাম একুশে বই মেলায়। নতুন পুরাতন লেখকদের ভিরে সময়টা দারুন কাটছিলো। মঞ্চে গুনী লেখকরা কথা বলছেন তা শুনছিলাম। ঠিক সেই মুহুর্তে পিছন থেকে ডাক পরলো এইযে ভাইয়া! আমি পিছনে তাকাতেই চমকে উঠলাম। কালো পেরের সবুজ শাড়ী পরা এক রমনি আমার দিকে হাসি মুখ নিয়ে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা বললো কেমন আছেন ভাইয়া? আমি মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে ছিলাম। আবার বলে উঠলো সে। কি হলো ভাইয়া আমাকে চিনতে পারছেন না? আপনার সাথে সমুদ্র তটে দেখা হয়েছিলো সপ্তাহ খানেক আগে। আমি বললাম হ্যা "অনেক সুন্দর লাগছে তোমাকে" আমার কথা শুনে সে চমকে উঠলো। হয়তো এমন কিছু শোনার আশা করেনি। আমিও খানিকটা হকচকিয়ে গেলাম। কি বলতে কি বলে ফেললাম। বইমেলার কোলাহল যেন নিমিষেই থমকে গেল। মনে হতে লাগলো আমি আর সে ছারা এই পৃথিবিতে আর কেউ নেই। সে অনুভূতি বলে প্রকাশ করা যায়না। মেয়েটা লজ্জায় মাটির দিকে তাকিয়ে আছে। আমিও খানিকটা লজ্জা পেয়েছি কথাটা বলে। মুখ ফসকে মনের কথা এভাবে বের হয়ে যাবে তা আমিও ভাবতে পারিনি। দুজনে অনেক্ষন চুপ থাকলাম। মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিলোনা, কি বলবো তাও ভেবে পাচ্ছিলাম না।

সব লজ্জার বাধ ভেঙে বলেই ফেল্লাম আপনার নাম্বার টা পেতে পারি? সে কিছু বললোনা। এখনও মাটির দিকে তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তার ফোনটা বারিয়ে দিয়ে বললো নিয়ে নিন নাম্বার। আমি আর দেরি না করে দ্রুত হাতে নিয়ে নিলাম। আমার ফোনে কল দিতেই চলে আসলো তার নাম্বার। তারপর দুজনেই চুপ হয়ে রইলাম অনেক্ষন। কি বলবো তাই ভাবছিলাম। কথা গুলো সব আটকে আছে বুকের ভেতরে। বলার সব ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। কি করবো তাও বুঝে উঠতে পারছিলাম না।

সে বললো তাহলে আমি আসি। কোন কথা বললাম না সুধু মাথা নেরে সায় দিলাম। কিছুদূর যাবার পর মনে হলো ওহহো তার নামটাই জিগ্যেস করা হলোনা।bangla golpo

হয়তো সেও তাই ভাবছে, অথবা ভাবছেনা। "ভাবনা গুলো কি বিচিত্র, কখন কিভাবে প্রকাশ পায় তা বলাটাই দুষ্কর" তার চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রইলাম বহুক্ষণ। বুকে চাপা পরে রইলো হাজারো না বলা কথা। যা অগোচরে বারতেই থাকলো। মনের সকল ভাবনা গুলো সব তাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছিলো। তাই বই মেলার বই না কিনেই বাসায় চলে গেলাম। যদিও আমার বন্ধু আমাকে বই উপহার দিয়েছিল।

রাতে তেমন একটা ঘুম হলোনা।

পরদিন সকালটাও কাটলো স্বাদহীন ভাবেই। বিকেলে ভাবছিলাম মেয়েটাকে ফোন দিবো কিনা। আর ফোন দিয়েই বা কি বলবো। হাজারটা ভাবতে ভাবতে ফোন দিয়েই দিলাম। কিছুক্ষণ পর ফোন রিসিভ হলো।

হ্যালো কে বলছেন?

আমি আবারো চুপ করে রইলাম। কি বলবো আর কিভাবেই বলবো তাই ভাবছি। ওপাস থেকে আবার বলে উঠলো কি হলো? কথা বলছেন না কেন? কে বলছেন পরিচয় দিন। আমি আমতা আমতা করে বললাম -আমি। ওপাস থেকে বললো তো এই -আমিটা কে জানতে পারি? আমি বললাম আমিটা হলাম -আমি। গতকালকের বোকা ছেলেটা। যে ঠিক মতো কথাও বলতে পারেনা। ওপাশ থেকে মৃদু হাসির আওয়াজ আসলো। আর বললো ওহ! আপনি?

এভাবেই শুরু হয়েছিল আমাদের কথা বলা। ফোনে ফোনে ঘন্টার পর ঘন্টা চলে যেত অজান্তেই। মুহুর্ত গুলো এতই মধুর যে তা উপলদ্বি করা যায় শুধু। বলে প্রকাশ করা যায় না। দিনকেদিন দুজনে হয়ে উঠেছিলাম অনেকটাই আপন। তার কথা না শুনলে মনে হতো জীবনটা নিতান্তই বৃথা। রাত গুলো কাটতো নির্ঘুম মধুর। এই ভালোবাসা বুঝি কোনদিন শেষ হবেনা।bangla golpo

এই ভালোবাসা শেষ হবার নয়। জীবনের সকল কিছুর উর্ধে অনুভব হচ্ছিলো। কেমন ভালোলাগা তা বুঝানো সম্ভব না। তা সুধু অনুভুতীতে গ্রহন করাই যায়।

লুকোচুরি হাজারো কথার মাঝে হারিয়েই গিয়েছিলাম দুজনে। দুই মাস পর অনেক অনুরোধে তার নামটা জানতে পারলাম। যদিও এর আগে হাজারটা ছদ্মনাম বলেছিলো। তার নামের সাথে তার সভাবের অনেকটাই মিল রয়েছে। "বৃষ্টি" তার নাম। সে বৃষ্টি মতই কখনও শান্ত, কখনও স্তব্ধ। কখনও প্রবল,কখনও মুমূর্ষু। আবার কখনও ব্যাপক প্রশান্তিময়। তার সব টুকু জুরেই আমার ভালোবাসা।

তার সাথে দেখা হলো আরো দুই মাস পর। সে জানে আমার সবুজ খুবই প্রিয় তাই হয়তো সব সময় সবুজে পোষাক পরাটাই তার অভ্যাস। আমার সব টুকু ভালোলাগা সে তার ভিতরে ফুটিয়ে তুলেছে। ইচ্ছে হলেও তার উপর রাগ হতে পারিনা। তার সাথে রাগ করাটাও নিতান্ত বেমানান। পার্ক,রেস্টুরেন্ট,শরণীয় স্থান, বিশেষ ঘোরার যায়গা গুলো হয়তো কিছুই বাদ রাখা হয়নি আমাদের। সব স্থানেই আমাদের সৃতি মিশে আছে। আমাদের ভালোবাসার শাক্ষী হয়ে রয়েছে সেখানকার আকাশ বাতাস এবং প্রকৃতি।

হঠাৎ একদিন প্রচণ্ড রোদেলা দুপুরে আমাকে ফোন করলো বৃস্টি। সে বললো বিসিএস পাশ করতেই হবে নয়তো তার সাথে আমাদের মিলনটা কখনই সম্ভব নয়। তার বাবা মায়ের চাহিদা একজন উচ্চপদস্থ সরকারি চাকুরীজিবি। যদিও আমার চাকরী ব্যাপারটাই একঘেয়েমি লাগে। তবুও বৃস্টির আশা অনুরূপ আমি পরিক্ষার প্রস্তুতি শুরু করলাম সব কিছু বাদ দিয়ে বিসিএস বিষয়ে পড়তে শুরু করলাম। দিনরাত এক করে পড়তে শুরু করেছি। তখনও পরিক্ষার বাকি পাঁচ মাস। এক কান্না জর্জরিত কন্ঠে, বৃস্টি ভেজা রাতে "বৃস্টি" ফোন করে বললো আমার সাথে তার ঘর বাধার স্বপ্ন আজীবন স্বপ্নই রয়ে যাবে। কারন তার আগামিকালই বিয়ে। এক উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা পেয়েছেন বৃস্টির বাবা। ছেলেটিকে হাত ছারা করতে চায়নি। তাই দ্রুত বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন। কথা গুলো আমি নিতে পারছিলাম না। কারন তাকে ঘিরেই আমার সকল ভাবনা। তাকে ছারা কিভাবে বেঁচে থাকবো বুঝতে পারছিলাম না। ব্যাপারটা বাবার কাছে বললাম। বাবা সবটা শুনে আমাকে অভয় দিলেন তিনি চেস্টা করবেন আমাদের চার হাত এক করতে। বাবা বৃস্টির বাবার সাথে কথা বললেন। কিন্ত বৃস্টির বাবা কোন মতেই আমার কাছে তার মেয়েকে দিতে রাজি নন। তার হাতে এতো ভালো পাত্র থাকতে এক বেকার যুবকের হাতে মেয়ে তুলে দেয়ার কোন মানেই হয়না। শেষমেশ বাবাকে অপমানিত হয়েই চলে আসতে হলো। ব্যাপার গুলো আমি নিতে পারছিলাম না। বৃস্টির এক কথা তার বাবা যা বলবে তাই সে শুনবে। তার বাবার মতের বিরুদ্ধে যাবার সাহোস তার নেই।bangla golpo

পৃথিবি আমার কাছে খুবই তুচ্ছ মনে হতে লাগলো। আমার ভাবনা গুলো এভাবে চুর্নবিচুর্ন হয়ে যাবে কখনও ভাবিনি। স্বপ্ন গুলো এভাবে নস্ট হয়ে যাবে তাও কখনই ভাবিনি। আমার বুকে তিব্র ব্যাদনা প্রকোপ হচ্ছিলো। প্রতিটি মুহুর্ত বিষাক্ত হয়ে উঠছিলো। ভাবনা গুলো এভাবে নিঃশেষ হয়ে যাবে তা মেনে নিতে পারিনি। তার সৃতি গুলো খুবই ব্যাদনা দিচ্ছিলো। নাহ সব কিছু উল্টোপাল্টা লাগতে থাকলো। তাকে ভুলে থাকাটা অসম্ভব। তার সৃতিগুলো প্রতিমুহূর্তে কস্ট দিতে লাগলো। পরদিন ঠিকই তার বিয়ে হয়ে গেলো। খুব ইচ্ছে ছিলো তাকে বউ এর সাজে দেখবো কিন্তু তাও হলোনা। সব স্বপ্ন গুলো নিতান্ত স্বপ্নই রয়েগেলো।

তাকে ভুলতে না পারার কস্ট ভুলে থাকার জন্য নেশাকে আপন করে নিলাম। প্রথমে সিগারেট তারপর গাজা তারপর মদ, হিরোইন, কোকেন কোনটাই বাদ দেইনি যতক্ষণ নেশায় বুদ হয়ে থাকি ততক্ষণই তাকে ভুলে থাকতে পারি। নেশা কেঁটে গেলেই আবার তার সৃতি গুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। একরাশ কস্ট বুকের ভেতরে। ভাবনা গুলো সব বিরক্তিতে পরিপুর্ন হয়ে যায়। নেশায় যেখানে সেখানে পরে থাকাটাই জীবন হয়ে উঠলো। বাবা আর আত্নিয় স্বজনরা সবাই আমাকে বুঝানোর কম চেস্টা করেনি। কিন্ত আমার বুকভরা কস্টের কাছে সেই সকল আশার বানী তুচ্ছ মনে হতে লাগলো। জোড়াতালি দেয়া স্বপ্ন গুলো সব বাঁচবার চাহিদা কমিয়ে দিয়েছে। তবুও বেঁচে আছি কি কারনে তাও জানিনা। অর্থহীন জীবন তিলে তিলে শেষ করাটাই মনে হতে লাগলো আমার কাজ।bangla golpo

এভাবেই দিন দিন রোগাক্রান্ত হতে লাগলাম। মাথায় তিব্র ব্যাথা শুরু হলো। মাঝে মাঝেই রক্তবমি হতে লাগলো। আমার ব্যাদনা যুক্ত জীবন আরো অনেক বেশি ব্যাদনা ময় হয়ে উঠলো। মনের ব্যাদনা না ফুরতেই শরিরের ব্যাদনায় কাতর হয়ে উঠলাম।

bangla golpo
bangla golpo
 

জনক-bangla golpo

লেখকঃ মোঃ নাজমুল আকন

[তিন]

ভাবতে ভাবতে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেল খেয়ালহীন। কিছুক্ষণ পর পর মাথায় তিব্র ব্যাথা শুরু হচ্ছে।

পরিক্ষায় আমার রক্তে কোকেন পাওয়া গেছে, সিদ্ধান্ত নেয়া হলো আমাকে দ্রুত অপারেশন করানো হবে।

অনেকটাই নাকি দেরি হয়ে গেছে। আমার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরন হচ্ছে। এখনও বেঁচে আছি সেটা দেখে সবাই অবাক। বাবা এখনও পাশেই বসে আছেন। তাকে অনেকটাই দুর্বল লাগছে। হয়তো এখনও খায়নি। বাবা খেয়েছো বলার সুজগটাও পাইনি এর আগেই আমাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হলো। নিউরো সার্জেনেরা সাত ঘন্টা অপারেশন করেছেন।

তারপর আর কিছু জানিনা।

কুড়ি দিন পড় আমার জ্ঞান ফিরলো। চোখ মেলতেই দেখলাম বাবা আমার বেডের পাবে বসে আছেন। হয়তো হালকা ঝিমুচ্ছিলেন। আমাকে জাগতে দেখে ভুত দেখার মতো করে চমকে উঠলেন। কাঁদতে কাঁদতে বললেন বাবা তুই ঠিক আছিস?

হুম! আমি ঠিক আছি বললাম। বাবা এখনও কাঁদছেন। ডাক্তারদের ডাকতে শুরু করলেন বাবা। ডাক্তাররা এসে আমাকে দেখে গেলেন। এক নার্স এসে বললেন। আপনার বাবা এই কুড়ি দিন আপনার বেডের পাশেই বসে থাকতেন। কখন আপনি চোখ খুলবেন সেই অপেক্ষায়। ঠিক মতো খাবারটাও খেতেন না। আপনার রিস্পন্সের অপেক্ষার প্রহার গুনতেন বসে বসে আপনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেন।

কিসের এত দুঃখ আপনার এতো ভালো বাবা থাকতে? কেন তিলে তিলে নিজেকে শেষ করতে চাচ্ছিলেন। আমি হালকা হাসি দিয়ে বললাম আর কখনও নিজেকে তিলে তিলে শেষ করবোনা। এখন বাঁচবো নিজের জন্য। আমার বাবা জন্য। বাবাকে কখনই একা ফেলে যাবনা। bangla golpo

জীবনের সকল সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নেব। আমার বাঁচাটা হবে সুধু আমি আর বাবা। আর কিছু চাইনা। আর কিছু প্রয়োজন নেই। বাবা আমাকে জরিয়ে ধরলেন। এখনও কাঁদছে, আমি বাবার চোখের জল মুছে দিয়ে বললাম বাবা কাঁদছো কেন আমরা আবার আগের মতো থাকবো। এক সাথে থাকবো। আমাদের পৃথিবী হবে অন্য এক পৃথিবী। যেখানে সুধু বাবা আর সন্তানের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ পায়। আর কিছু নয়। আমাদের আর কিছুর প্রয়োজনও নেই। বাবা কিছু বললেন না সুধু কেঁদেই চলেছেন। কাঁদুক বাবা আজ কাঁদুক জীবনে শেষ বারের মতো কাঁদুক। তাকে আর কখনও কাঁদতে দিবোনা। তার স্বপ্ন গুলো বাস্তবে রূপান্তর করাই হবে আমার সংকল্প।

আমি উঠতে চেয়েও উঠতে পারলাম না আমার হাত পা অবশ হয়ে আছে। নার্স বললেন আপনি পেরালাইস হয়ে পড়েছিলেন এতদিন। আজ আপনার জ্ঞান ফিরেছে। ধিরে ধিরে আপনার সুস্থ হতে থাকবেন। হাতে পায়ের শক্তি ফিরে পাবেন। আপনার আত্নশক্তিই আপনাকে দ্রুত সুস্থ করে দিবে।

বাবার আরো পাঁচ দিন পর আমাকে বাড়িতে নিয়ে আসলেন। আত্নিয় স্বজন অনেকেই আমাকে দেখতে আসলেন। আবার চলেও গেলেন। আমি সুধু বিছানায় সুয়ে সুয়ে সুস্থ হবার প্রহর গুনছি।

বাবা আমার নিয়মিত যত্ন নিতে থাকলেন হাতে পায়ের ব্যায়াম করাতে লাগলেন। ধিরে ধিরে আমি হাত পায়ের আঙুল নারাতে পাড়লাম। বাবা আমাকে গোসল করানো, খাওয়ানো,ব্যায়াম করানো, সহ মাঝে মাঝে নিরব যায়গা গুলোতে ঘুরতে নিয়ে যেতেন। হুইল চেয়ারে বসে বসে পৃথিবী দেখবো কখনও ভাবতে পারিনি। বাবার পরিচর্যায় আমি ধিরে ধিরে সুস্থ হয়ে উঠলাম। আমার হাত পায়ের শক্তিও ফিরে পেলাম ধিরে ধিরে। দীর্ঘ পাঁচ মাস পর আমি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠি। বাবার যত্ন আমাকে খুব দ্রুতই সুস্থ করে তুলেছে। দিন রাত এক করে বাবা আমার সেবা করেছেন। নিজের শরিরের যত্ন নেবার কথা ভুলেই গেছেন।bangla golpo

সুধু আমাকে সুস্থ করতে হবে তাই বাবার ধ্যান ধারনা। বাবারা এমনি হয়ে থাকে তারা শরিরে শেষ রক্তটুকু থাকা পর্যন্ত সন্তানের কথাই চিন্তা করেন। সন্তানের মঙ্গলের কথা চিন্তা করেন। আমি আর বৃষ্টিকে কোন দোষ দেইনা আমার মতে সে ঠিক কাজটিই করেছে। তার বাবার কথার গুরুত্ব দিয়েছে। তার বাবার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করে সুখেই আছে। হয়তো আমি এতটা সুখ দিতে পারতাম না। তাই বিধাতা আমার মিলন তার সাথে দেয়নি। বিধাতা যানেন কার সাথে কার মিল যায়। কার সাথে কাকে বেশি প্রয়োজন। আমার বাবার মতো হাজারো বাবা আছেন যারা সন্তানের চিন্তায় দিনরাত এক করে ফেলেছেন। বাবারা এমনি হয়ে থাকে। তারা সব সময় সন্তানের চিন্তায় বিভোর হয়ে থাকে। তাইতো আমরা বার বার ফিরে আসতে পারি সুন্দর পথে। যে পথে কাঁদা নেই আছে কোমল ভবিষ্যৎ। সকল বাবাদের প্রতি ভালোবাসা।

সমাপ্ত-

bangla golpo

 

কোন মন্তব্য নেই

konradlew থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.